Breaking

Thursday, May 20, 2021

ইজরাইল - ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব (২য় পর্ব)

 



১৯১৭ সালে ব্রিটিশ ইহুদিদের কথা দেয় যে ইহুদিরা  অটোমান সম্রাজ্যের বিরুদ্ধে ব্রিটিশদের সাথে যুদ্ধ করলে বা যুদ্ধে সহায়তা করলে তারা ফিলিস্তিনের মধ্যে ইহুদিদের থাকার জন্য আলাদা দেশ বানিয়ে দিবে। 

১৯১৮ সালে ব্রিটিশরা যুদ্ধে জয়লাভ করার পরে কোনো কথা রাখে নাই। বরং তারা ফিলিস্তিনে নিজেদের উপনিবেশ স্হাপন করে এবং বলে যতদিন ফিলিস্তিনরা নিজেদের দেশ শাসন করতে না পারবে ততদিন ব্রিটিশ  উপনিবেশ এখানে থাকবে এবং ব্রিটিশরা শাসন করবে।

ব্রিটিশরা ইহুদিদের শাসক হিসেবে যোগ্য তৈরি করার জন্য ফিলিস্তিনে স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি  স্হাপন   করে।কিন্তু মুসলিম, খ্রিস্টান, ইহুদিদের জন্য আলাদা আলাদা স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি স্হাপন করে।ফলে অচিরেই মুসলিম, ইহুদিদের মধ্যে বিদ্বেষ তৈরি হয়।

ধীরে ধীরে ব্রিটিশদের সাহায্যে ফিলিস্তিনে ইহুদিদের সংখ্যা ৩% থেকে বেড়ে ৩০% হয়ে যায়।ফিলিস্তিন বাসীরা তখন ইহুদিদের অনুপ্রবেশে বাধা দেয়। তখন ব্রিটিশরা ফিলিস্তিন বাসীদের কথা দেয় ১০ বছরের মধ্যে  তাদেরকে স্বাধীন করে দিবে। 

১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত ২য় বিশ্ব যুদ্ধ সংগঠিত হয়।ফলে এই বিষয়টা ধামাচাপা পরে যায়।তখন ব্রিটিশরা বিষয়টা মিটানোর জন্য  ১৯৪৫ সালে সদ্য গঠিত রাষ্ট্রসংঘ্য ইউ.এন. কে দায়িত্ব দেয়।তারা বিষয়টি মিটাতে না পেরে ১৯৪৭ সালে মুসলিম আর ইহুদিদের মধ্যে জায়গা ভাগ করে দেয়।কিন্তু মুসলিমরা এটা মানতে পারলো না।

১৯৪৮ সালের ১৪ ই মে ইহুদিরা পুরোপুরি পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির সাথে স্বাধীন রাষ্ট্র ইজরাইল হিসেবে ঘোষণা দেয়। আর এখান থেকেই মূল বিবাদ সৃষ্টি হলো।

১৯৪৮ সালের ১৫ ই মে পুরো আরব দুনিয়া ইজরাইলকে আক্রমণ করলো।কিন্তু ইজরাইলের মতো ছোট দেশের কাছে পুরো আরব দুনিয়া হেরে গেল। ইজরাইল শুধু আরব দুনিয়াকে হারিয়ে দিল না,ফিলিস্তিনির অনেক অংশ ইজরাইল দখল করে নিল।শুধু তাই নয় ৭ লাখ ফিলিস্তিন বাসী নিজেদের দেশে রিফিউজি হয়ে গেলো। আর ফিলিস্তিন ২ টি অংশে ভাগ হয়ে গেলো। WEST BANK নামে একটা অংশ, যা জর্ডানের নিয়ন্ত্রণাধীনে চলে যায়। GAZA নামে  অন্য একটি অংশ, যা মিশরের নিয়ন্ত্রণাধীনে চলে যায়।এর ফলে ইহুদিদের স্বপ্নের রাষ্ট্র ইজরাইল তৈরি হয়ে গেলো। আর মুসলিমদের এখান থেকেই দুঃস্বপ্নের শুরু। মুসলিমদের নিজেদের দেশে নিজেদেরকে বাঁচানোর লড়াই শুরু হলো।  

১৯৫৬ সালে মিশর সুয়েজ খালকে ব্রিটিশদের কন্ট্রোল থেকে মুক্ত করে নিল। ফলে মিশরের বিরুদ্ধে ইজরাইলের সমর্থন পেতে ইজরাইল এবং ব্রিটিশদের মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হলো।

 ১৯৬৭ সালে আবার আরব দুনিয়া ইজরাইলকে আক্রমণ করলো, যা 6 day war নামে পরিচিত। আবারো আরব দুনিয়া হেরে গেল। ইজরাইল জয়লাভ করলো। ইজরাইল আবারো কিছু জমি দখল করে নিল। শুধু তাই নয়, ইজিপ্ট ও সিরিয়া থেকেও কিছু জমি নিজেদের জমির সাথে যোগ করে নিল। 

১৯৭৩ সালে আবার ইজরাইল ও আরবদের সাথে যুদ্ধ সংগঠিত হয়, যুদ্ধে ইজরাইল জয়লাভ করে এবং জমি দখল করে। 

যতবার যুদ্ধ সংগঠিত হয় ততবারই ইজরাইল জয়লাভ করে এবং প্রতিবার জমি দখল করে নিজেদের মানচিত্র বড়ো করে।

গাজায় বিপ্লবী দল হামাস, যা ১৯৮৭ সালে তৈরি হয়েছিল। ফিলিস্তিন বাসীর কাছে এই হামাস হলো বিপ্লবী দল।কিন্তু পুরো দুনিয়ায় কাছে সন্ত্রাসবাদী দল।যারা সবসময় ইজরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে দিয়েছে। গাজায় অবস্থিত এই হামাস ১৯৯৩ সালে ১৬ ই এপ্রিল  ইজরাইলে ১ম সুইসাইড আক্রমণ করে এবং বম ফেলে। তখন থেকেই ইজরাইল আর গাজার এই হামাসের যুদ্ধ আজও চলছে। 

সমস্যা সমাধানের একটা জায়গা তৈরি হয়েছিল Oslo Peace Conference এ, কিন্তু ইজরাইল কিছুতেই ফিলিস্তিন কে তাদের দখল করা জমি ফেরত দিতে রাজি হয় না।এই একগুয়ে মনোভাবের জন্য  Oslo Peace Conference এ কোনো সমাধান হয় না।

২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ইজরাইলের প্রধান মন্ত্রী থাকেন Ariel Sharon নামে এক ব্যক্তি। Ariel Sharon ২০০০ সৈন্য নিয়ে জেরুজালেমের  পবিত্র মসজিদ দখল করে এবং নিজেদের  বলে দাবি করে।

No comments:

Post a Comment